আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা
সূচিপত্রঃ আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা
- আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা
- আখের রসের অপকারিতা
- আখের রস খাওয়ার নিয়ম
- আখের গুড়ের উপকারিতা
- আখের রস খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে
- শেষ কথা
আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা
আখের রস অনেক সহজলভ্য এবং অনেক উপকারী একটা পানীয়। এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হচ্ছে আখ। এই সুস্বাদু পানীয় বিষাক্ত পদার্থ দূর করে প্রচুর পরিমাণে শরীরে শক্তি যোগাবে। শুধু তাই না, আখের রসের প্রচুর পরিমাণে মাইক্রো মিনারেল এবং ফাইবার আছে। আখের রসে কয়েক ফোটা লেবু ও একটু লবণ মিশালে এটি খেতে আরো সুস্বাদু মনে হয়।
আরো পড়ুনঃ বিলিরুবিন বেড়ে গেলে কি হয়
এই রসে শরীরে শক্তি জগতে সাহায্য করে থাকে এবং শরীরকে ভালো রাখে। শরীরকে ঠান্ডা রাখা এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ে কোন সমস্যা নাই। আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে। তবে নিয়ম অনুসারে খেলে আখের রসের উপকারিতা অনেক পাওয়া যাবে। চলুন আখের রসের উপকারিতা গুলো জেনে আসি-
- ক্যান্সার প্রতিরোধে আখের রসের উপকারিতা অনেক।
- আখের রস হজম শক্তির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে থাকে।
- আখের রস হার্ট অ্যাটাকের মত হৃদরোগের বিরুদ্ধে ও সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
- আখের রস ওজন কমাতে সহায়ক।
- গরমে রোদ এবং খামের কারণে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে থাকে। আখের রস ত্বকের সুস্থ ও উজ্জ্বলতা রাখতে সহায়তা করে থাকে।
- ত্বকের বার্ধক্য রোধ করতে আখের রস অনেক উপকারী।
আখের রসের অপকারিতা
আখের রস যে একটা শক্তিশালী পানীয় তাতে কোন সন্দেহ নাই। তবে এটা অত্যাধিক ব্যবহার করলে আখের রসের অপকারিতা হতে পারে। চলুন আখের রসের অপকারিতা গুলো দেখে আসি-
- আখের ঠান্ডা প্রভাব আছে, সেজন্য শীতকালে এর ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। না হলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
- রাস্তার পাশে বিক্রি করা আখের রস থেকে এড়িয়ে চলুন। কেননা, এই রসে ক্ষতিকারক জীবাণু থাকার সম্ভাবনা থাকে, যা আমাদের পেটের সমস্যা হতে পারে।
- ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট এবং ছত্রাকের মতো জীবাণু দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করার জন্য আখের রসের জমে থাকতে পারে। যা ক্ষতি করতে পারে আখের রসের।
- ময়লার সংস্পর্শে আসা আখের রসের উপকারের চাইতে বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- তাই আখের রস খেলে বুঝে শুনে খাওয়া উচিত।
আখের রস খাওয়ার নিয়ম
গ্রীষ্ম এর সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে ডিহাইড্রেশন, তাই এর হাত থেকে দূরে রাখতে আখের রস সাহায্য করে থাকে। চৈত্র মাস আসতে না আসতেই গরম পড়ে গেছে। সময় যত বাড়তে থাকবে, তাপমাত্রা ও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকবে। রোদ আর গরম থেকে বাঁচার জন্য এই সময় শরীরের পক্ষে ঠান্ডা পানীয় পান করা ভালো। কিন্তু শর্করার পরিমাণ এ ধরনের পানীয়তে বেশি।
যা আদতে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। এর পরিবর্তে গরম কালে আপনি আখের রস পান করতে পারেন। যদি আমরা আখের রসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কথা বলতে যাই, তাহলে এর পুষ্টিগুণ অনেক। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য ইলেকট্রোলাইট। তবে আখের রস খাওয়ার নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ সায়াটিকা সারানোর উপায় - সায়াটিকা কেন হয়
কেননা, সবকিছুই একটা নিয়ম রয়েছে। না হলে পরবর্তীতে হিতে বিপরীত হতে পারে। আখের রস খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে বিকাল বেলা। রাতের বেলায় আখের রস এড়িয়ে চলাটাই ভালো। আপনার শরীরকে সতেজ রাখার জন্য এবং হাইড্রেটেড রাখার জন্য গ্রীষ্মকালে ঠান্ডা এক গ্লাস আখের রস খেতে পারেন এবং উপকারিতা উপভোগ করতে পারেন।
আখের গুড়ের উপকারিতা
আখের গুড় শুধুমাত্র পায়েস, পুলি পিঠা ইত্যাদি মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করবার জন্য নয়। আখের গুড়ে রয়েছে অনেক উপকারিতা। এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। গ্রীষ্ম বর্ষা এবং শীত বারো মাসেই দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্য আখের গুড় সাহায্য করে থাকে। চলুন আখের গুড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি-
- আখের গুড় শরীরের তাপমাত্রা উৎপাদন করে এবং দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্য সহায়তা করে থাকে।
- আখের গুড়ে রয়েছে উচ্চমানের ক্যালরিফিক যা আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
- ক্ষতিকর অণুজ বৃদ্ধি হ্রাস করতে সাহায্য করে থাকে আখের গুড়।
- আখের গুড় নিয়মিত খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে।
- এটি ফুসফুস, অন্ত্র এবং খাদ্যনালী সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে।
- খাওয়ার পর এক চামচ আখের গুড় খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য এর সমস্যা থাকলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
- গরমের সময় শরীরকে ঠান্ডা রাখতে আখের গুড়ের শরবতের কোন বিকল্প নাই।
- এটা খেলে চটজলদি এনার্জি পাবেন।
- লিভার হতে দূষিত পদার্থ বাহির করে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে ন্যাচারাল এই ফুড।
- রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে আখের গুড় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
আখের রস খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে
এক গ্লাস ঠান্ডা আখির রস এই প্রচন্ড গরমে মুহুর্তের মধ্যেই মনে প্রশান্তি এনে দেয়। শুধু তাই না, আখের রস হয়ে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার। এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীর থেকে সকল দূষিত পদার্থ দূর করে আমাদেরকে সব রকম রোগ থেকে দূরে রাখে। এছাড়াও আখের রসের প্রচুর পরিমাণে মাইক্রো মিনারেলস ও ফাইবার রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ রেকটাম ক্যান্সার লক্ষণ - রেকটাম ক্যান্সার কি
এ সকল পুষ্টিগুণ থাকার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। আখের রস খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে না। বরং আখের রস খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানা যায় যে, আখের রস থেকে আইসোম্যাল্টোজ নামক উপাদান। যা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
তবে ডায়াবেটিস রোগীরা আখের রস অবাধে বা ইচ্ছামত খেতে পারবে না। পরিমাণ মতো এবং সময় অনুসারে খাওয়া উচিত। কেননা, আখের রসের প্রাকৃতিক চিনি এবং সুক্রোজ বেশি পরিমাণে থাকে। সেজন্য আখের রস খাওয়ার সময় ডায়াবেটিস রোগীদের খুব সতর্কতা অবলম্বন করে খাওয়া উচিত।
শেষ কথাঃ আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা
আখের রস খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে আখের রস খাওয়ার নিয়ম আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
আজ আর নয়, আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই আখের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url